কুড়িগ্রামের রাজারহাটে তিস্তা নদীর জেগে উঠা চরাঞ্চলের জমিতে শীতকালীন ফসলের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনায় চাষাবাদে ব্যস্ত শতশত কৃষক-কৃষাণী। শীতকালীন ফসল বাম্পার ফলনে লাভবানের আসায় আগাম আলু, পেঁয়াজ, রসুন ও মিষ্টিকুমড়া রোপণ করছে।
কৃষকরা বলেন, এ বছর বন্যায় ভারত থেকে পানির সঙ্গে কাঁদা পানি আসার ফলে তিস্তা নদীর বালু মাটির উপরে পলি জমায় কৃষিতে বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে। কৃষক আমিনুল ইসলাম বলেন, আমার নিজস্ব জমি নেই। আমি ০৭ মাসের জন্য ০৬ একর জমি বর্গা নিয়ে আলু চাষ বীজ রোপণ করছি। আলুর পরিচর্যা চলমান রয়েছে।
পরিপক্ব হলে আলু তুলে বাদাম রোপণ করবো। জমির মালিককে ৬৫ হাজার টাকা দিয়ে যাবতীয় খরচ হিসাব নিকাশ শেষে যা হবে লাভ তাতেই সন্তুষ্ট। কৃষাণী শাহিদা বেগমের সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, এক একর জমি বন্দক নিয়ে আলু চাষ করেছি। আশা করি এবার ভালো ফলন পাবো। বালু চরে স্যালোমেশিন দিয়ে পানি নেয়া লাগে, কামলা কিশান সব বাদ দিয়ে যা লাভ হয় তাতেই সন্তুষ্ট।
বিদ্যানন্দ ইউনিয়নে চরে দায়িত্বপ্রাপ্ত উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা আবু তাহের বলেন, আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা এ চরে নির্ধারণ করা হয়েছে ৩৫০ হেক্টর জমিতে। আলুর পাশাপাশি কৃষকরা মিষ্টিকুমড়ার আবাদ করে স্বাবলম্বী হওয়ার আশা করছেন। তবে এখনো পেঁয়াজ ও রসুনের পরিসংখ্যান হাতে পায়নি। তিস্তার চরে কাজ করতে এসেছেন আলেয়া বেগম নামের এক নারী।
তিনি বলেন, সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত কাজ করলে মজুরি পাই ২০০ টাকা। পুরুষরা পান ৪০০ টাকা। মজুরিটা একটু বেশি হলে ভালো হতো। আলু বীজ রোপণ করার সময় নিয়মিত কাজ করছি একারণে সংসারে একটু অভাব কমেছে। এরকম কাজ সারাবছর থাকলে, আমার মত পরিবারগুলোর অনেক ভালো হতো।
পাইকার পাড়া মহিলা মাদ্রাসার শিক্ষক জাহেরুল হক বলেন, তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে আমাদের উত্তর অঞ্চলের কৃষিপণ্য বিভিন্ন এলাকায় আমদানি হবে।
রাজারহাট উপজেলার অতিরিক্ত কৃষি অফিসার হৈমন্তী রাণী বলেন, আমাদের কৃষকরা শীতকালীন আলু, সরিষা, পেঁয়াজ, রসুন ও মিষ্টিকুমড়া রোপণে ব্যস্ত সময় পার করছেন। এদিকে আগাম অনেক শাকসবজিও পাওয়া যায়। যেহেতু কৃষকরা দাম ভালো পায়, তাই একটু বেশি পরিসরে চাষাবাদ করার জন্য উৎসাহী হচ্ছেন।
টিএইচ